নিজস্ব প্রতিবেদক:-ফ্যাসিবাদ মোকাবিলা, নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সকল ছাত্রসংগঠনের সমন্বয়ে ছাত্র ঐক্য গঠনের আহ্বায়ক জানায় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
বুধবার (২৬ আগস্ট) ছাত্রশিবিরের সভাপতি রাজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
নেতৃরা বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রান্তিলগ্নে ছাত্রসংগঠনগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্রসমাজ হাতে হাত রেখে আন্দোলন করেছে। গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী জালেম সরকার এদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলকে সভা-সমাবেশের অধিকার কেড়ে নিয়ে মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।
বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি, জেল, জুলুম, নির্যাতন করেছে ফ্যাসিবাদী সরকার। একইসাথে ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিরোধীমতের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গুম, খুন করেছে এ সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ মানুষ এ সরকারের বিদায়ের অপেক্ষার প্রহর গুনছে। একই সাথে অবৈধ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারও তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এ চরম মুহূর্তে জনতার পাশাপাশি সকল ছাত্রসংগঠনকে একতাবদ্ধ হয়ে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা গঠনের আন্দোলনে শামিল হওয়া জরুরি।’
নেতৃদ্বয় আরো বলেন, ‘ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্বিবদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে হেন কোনো অপকর্ম নেই, যা ছাত্রলীগ করছে না। এ চরম মুহূর্তে আওয়ামী সরকারের অপকর্মের দোসর হিসেবে প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
ছাত্রসংগঠনসমূহের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতৃরা বলেন, ‘আজ জাতির কাছে স্পষ্ট বিষয় হলো ছাত্রলীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। এ সন্ত্রাসী সংগঠন সারাদেশে নৈরাজ্য চালিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী হয়ে কাজ করছে। এ মুহূর্তে সকল ধরনের ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জাতীয় স্বার্থ ও সঙ্কটের প্রতি খেয়াল রেখে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। আমাদের মাঝে বিভেদ থাকলে অবৈধ সরকার তার সুযোগ নেবে এবং আবার ক্ষমতার মসনদে বসে এদেশের মানুষের ওপর জুলুমের স্টিমরোলার চালাবে।
এ অবস্থা পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ দুর্বার গণআন্দোলনের বিকল্প নেই। আর বাস্তবতা হলো ছাত্রসমাজের অগ্রণী ভূমিকা পালন ছাড়া স্বৈরাচারকে কখনো হটানো যায়নি। আগেও ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ দেশের শীর্ষ ছাত্রসংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে আওয়ামী সরকারের অপশাসনের উপযুক্ত জবাব দিয়েছে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে।
আমরা মনে করি, দেশের ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য গঠনের প্রয়োজনীয়তা ইতোমধ্যেই উপলব্ধি করেছেন। এখন দ্রুততার সাথে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন জরুরি। অবৈধ স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করে জনগণের মুক্তি নিশ্চিত করতে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন গড়ে তুলতে ছাত্রশিবির প্রস্তুত রয়েছে। ছাত্রশিবির অতীতের মতো এবারো স্বৈরাচার বিদায় করতে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে, ইনশাআল্লাহ।
তথ্য সুত্র:- নয়া দিগন্ত