টাকাগুলো দিয়ে ৪১ কদম হাঁটুন, দ্বিগুণ হয়ে যাবে!

পোস্ট এর সময় : ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ , ভিজিটর : ২

সৌদি আরব প্রবাসী রত্না খাতুন। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পরিবারের জন্য ব্যাংকে টাকা পাঠিয়েছিলেন তিনি। মেয়ে রত্না খাতুনের পাঠানো টাকা ব্যাংক থেকে তুলে বাড়ি ফিরছিলেন মা রোকেয়া বেগম (৫০)।

ব্যাংক থেকে বের হওয়ার পর হঠাৎ সামনে এসে দাঁড়ান মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি। বলেন, ‘আপনার কাছে যে টাকা আছে সেই টাকা আমার কাছে দিলে আপনার টাকা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এর জন্য আপনাকে ৪১ কদম হাটতে হবে।’

দাড়ি মুখে, সাদা পাঞ্জাবি গায়ে দেওয়া মানুষটিকে দেখে রোকেয়া খাতুন ভড়কে গিয়ে তার হাতে টাকা তুলে দেন। এরপরই তার ৩০ হাজার ৭০০ টাকা নিয়ে সটকে পড়ে ওই ব্যক্তি।

ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের জনতা ব্যাংকের নিচে মার্কেটের সামনে।

প্রতারণার শিকার রোকেয়া বেগম উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়নের রাড়িপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখের স্ত্রী। বর্তমানে তারা ফয়লা পৌর এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।

রোকেয়া বেগম জানান, সোমবার (২৭ মে) শহরের জনতা ব্যাংক থেকে মেয়ের পাঠানো ৩০ হাজার ৭’শ ৩০ টাকা উত্তোলন করে সিঁড়ি থেকে নিচে নেমে আসলেই ৩ প্রতারক আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। তাদের মধ্যে একজন আমাকে খালাম্মা সম্বোধন করে ডাক দেয়।

এরপর দাঁড়িয়ে থাকা বয়স্ক প্রতারককে সালাম দিতে বলে। আমি সালাম দিলে সে বলে আজকে আপনার মনের আশা পূরণ হবে। সাথে সাথে আমার মুখের সামনে একটি পাথর ঘুরিয়ে আমার নিকট যে টাকা আছে তা বের করতে বলে। সে আরও বলে টাকাগুলো তার হাতে দিয়ে ৪১ কদম পা বাড়ালেই টাকা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। যা আপনাকে দেয়া হবে।

তাদেরকে আমি বিশ্বাস করিনি কিন্ত ওই সময় আমি স্বাভাবিক ছিলাম না। আমি কোন কথা বলতে পারছিলাম না। পাথরটা আমার সামনে ধরার পর তারা যা বলেছে আমি তাই করেছি। এক পর্যায়ে আমি দেখছি আমার টাকা নিয়ে প্রতারকরা চলে যাচ্ছে তারপরও চারপাশের দোকানগুলোতে লোকজন থাকলেও আমি তাদেরকে জানাতে পারিনি।

কিছুক্ষণ পরে আমি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে লোকজনকে জানালে তারা আমাকে থানায় পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে পুলিশ এসে আশেপাশে খোঁজাখুঁজি করে কাউকে না পেয়ে পুলিশ আমাকে বাসায় পাঠিয়ে দেন।

প্রতারণার শিকার রোকেয়া বেগমের ছেলের বউ রুমা খাতুন জানান, আমার শাশুড়ি এখনও স্বাভাবিক হতে পারেননি। তার কথা মাঝে মধ্যে আটকে যাচ্ছে। টাকা তুলতে তাকে একা পাঠানো ঠিক হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ঈদের কেনাকাটার ভীড়ের সময় প্রতারকদের রুখে দিতে শহরে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো উচিৎ।

এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক এম.এ. করিম জানান, ঘটনাটি ঘটেছে ব্যাংক এরিয়ার বাইরে। ফলে আমাদের কিছু করার নেই। তারপরও প্রশাসনের সহযোগিতায় ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রতারকদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করবেন।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুস আলী বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে আমরা প্রতারকদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *