মোঃ আব্দুল বাকের সরকার বাবর, কসবা প্রতিনিধি :–ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় প্রকাশ্য দিবালোকে ডিবি পরিচয়ে শরিফুল ইসলাম নামক এক যুবককে অপহরন করে নির্যাতন করে তিন দিন পর বাড়ির পাশে মুর্মূষ অবস্থায় ফেলে পালিয়েছেন অপহরণ কারিরা।
গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই যুবক। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে তাঁর স্ত্রী রোজিনা আক্তার, মা – বাবা, বৃদ্ধ দাদী ও গ্রামবাসী আজ মঙ্গলবার ১৬ মে ,দুপুরে কসবা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্ত শওকত খানসহ ডিবি পরিচয়দানকারী চক্রটিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
অপহরনের শিকার শরিফুল ইসলাম কসবা উপজেলা, মুলগ্রাম ইউনিয়নের শ্যামবাড়ি গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে । অপহরন কারী শওকত খান ,একই গ্রামের মৃত শারফুদ্দিন খানের ছেলে। ২০২২ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্য বিরোধ চলে আসছিলো। এ বিষয়ে শরিফুল ইসলামের স্ত্রী রোজিনা আক্তার কসবা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ।
সংবাদ সম্মেলনে রোজিনা আক্তার বলেন , শওকতের বড় ভাই কামাল হোসেন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছে। ওই নির্বাচনে তার স্বামী সাবেক চেয়ারম্যান মইনুল ইসলামের পক্ষে কাজ করে । ওই বিরোধের জের ধরে তার স্বামী শরিফুল ইসলামকে গত ৮ মে ,বিকেলে শওকত খানের নেতেৃত্বে ৫/৬ জনের একটি অপহরনকারী দল কসবা টি – আলী কলেজের গেইটের সামনে মারধর করে ও জোর র্পূবক সিনেমার কায়দায় মুখে হাত ঢুকিয়ে কালো একটি মাইক্রোতে উঠিয়ে নিয়ে যায় । কুমিল্লা শহরের বাটপাড়া খান প্রেসের ২য় তলায় হাতে পায়ে শিকল বেধে নির্যাতন চালায়।
রোজিনা জানান , স্থানীয় ব্যবসায়িদের কারনেই শওকত গংরা ভয়ে আমার স্বামীকে হত্যা না করে ৩দিন পর বাড়ির পাশে হাত পা বাধা অবস্থায় ফেলে যায়। এমতাবস্থায় আমরা তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করে শরিফুল ইসলামের কথামতো ঘটনারস্থলে যাই এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন , রুবেল মিয়া , আব্দুল হান্নানসহ অনেকের সংগে কথা বলে সত্যতা যাচাই করি এবং ৮ জনকে আসামী করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি । এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শওকত খান ও তার দলবল এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব রাখেন , মূলগ্রাম ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মুন্সি হাবিবুর রহমান মাহফুজ , সাবেক ইউপি সদস্য শিশু মিয়া , শরিফুল ইসলামের দাদি রাবেয়া আক্তার , মা, নিলুফা আক্তার , বাবা সবুজ মিয়া, গ্রামবাসি আব্দুল মান্নান, মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহ , জামাল ভূইয়া , রনি ভূইয়াসহ অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে মূলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মুন্সি হাবিবুর রহমান মাহফুজ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান পদে তাদের পক্ষে নির্বাচন না করায় এলাকার মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। শওকত খানদের ভয়ে এলাকার মানুষ আতংকে বসবাস করছে। তিনি বলেন, আমি ইউপি মেম্বার নির্বাচিত হয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান হয়েছি, আমি মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা, কিন্তু শওকত খানদের কাছে আমার কোন নিরাপত্তা নেই। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
মুঠো ফোনে শওকত খান বলেন, আমার ভাই নির্বাচনে ১৯ ভোটে পরাজিত হয়েছে। আমি সরকারি চাকুরী করি কুমিল্লায় বসবাস করি। আমি শ্যামবাড়ি মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির ব্যাপারে মাদ্রাসায় যাওযার পথে শরীফুলের নেতৃত্বে আমাকে খুর দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। পরে ভয়ে শরীফুল পালিয়ে চট্টগ্রাম চলে যায়। তার চাচা মারা যাওয়ার পর এলাকায় আসলে আমি নয় তার আত্নিীয় স্বজন তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে দাবী করেছেন।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, অপহরনের ঘটনায় রোজিনা আক্তার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এর আগে শওকত খানও একটি অভিযোগ করেছে সেটিও তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।